বিজ্ঞানে আমি দশ পেয়েছি, মাত্র দশ
আমার কি দোষ বলো?
প্রশ্ন যা ছিল খুবই সহজ উত্তরও ছিল জানা
ভাগ্য আমার সহায় ছিল না পৌঁছুতে হল দেরি
নইলে আমি কি তেমন ছাত্রী বিজ্ঞানে ফেল করি?

সকাল থেকেই নানা অঘটন জলখাবারে আস্ত ডিম
রান্নার মাসি নিয়ম জানে না, ডিম খেতে নেই।  কেন না গোল ওমলেট দিলে দোষ কেটে যেত- লেটার মার্কস পেতাম ঠিক
ভাগ্য আমার ছিল না যেতে দেরি হলো অত্যাধিক

ঘর ছেড়ে যেই বেরুতে যাব দাদু হেঁচে দিল- হ্যাঁচ্চো..
ঠাকুরমা তাই রেগে মেগে কাইমাকে বললেন,
‘অ বৌমা হাঁচি পড়ল, বেরোয় না যেন।”
টিক টিক টিক তক্ষুনি
মা বললেন, “ঠিক আছে ঠিক আছে, একটু বসে যাবে টুনি।”
অগত্যা তাই বসতে হলো।

হাঁচির বিপদ যেই না কাটলো – চৌকাঠে পা
আবার পড়ল বাঁধা- ” টুনি ঘরে বসে যা।”
কপালে দিয়েছি দইয়ের ফোঁটা হাতে বিপদ তারিনি
কোমরে ঝুলছে টাউস মাদুলি বিপদ এড়াতে পারিনি।

অতি সাবধানে ঘরের বাইরে যেই না গিয়েছি
কুটটি বোন চেঁচিয়ে উঠলো
” দিদি দেখ দেখ পাঁচিলে একটা পাখি
কি সুন্দর হলদেটে ঠোঁট লালচে চোখ আর বাদামি পিঠ।”
তাঁকিয়ে দেখি,  পাঁচিলে বসেছে হায় হায়! ওটা এক শালিক!

রিক্শ কাকু দিচ্ছে তাড়া কিন্তু যাবার জো নেই
বাড়ির সবাই শালিক খুঁজছে,
আয়রে শালিক আয়,
আরেক শালিক না দেখে টুনি
কি করে স্কুলে যায়!

শালিক জুটলো অবশেষে
রিকশ ছুটলো খুব জোরে
আর দেরি নেই পৌঁছুতে স্কুলে
কিন্তু আমার পোড়া কপাল
হঠাৎ ব্রেক থামতেই হল
পথ কেটে গেছে কালো বেড়াল
দেরির পর আরও দেরি
দেরিতে গেলাম স্কুলে

সামনেই দেখি কী সব্বনাশ!
বিজ্ঞান দিদিমণি
খুলে বললাম
রাগে গজগজ
বসতে দিলেন ঘরে
বিজ্ঞানের ছাত্রী হয়ে তুমি ডুবে আছো সংস্কারে!
মুক্তমনা দিদিমণি অনেক বকাঝকার পরে
প্রশ্নপত্র এগিয়ে দিলেন
খাতা দিলেন।

হঠাৎ চেয়ে দেখি পলা নীলা শঙখে ভরা
দিদিমণির হাতের আঙুল গুলো।
বিজ্ঞানে আমি দশ পেয়েছি, মাত্র দশ
আমার কি দোষ বলো!