ওই যে হোথায় নদীর বুকে ভাসছে গাঁদাফুল
ওইখানেতেই ছিল আমাদের প্রাইমারি ইসকুল।
আর ওই যে বাঁদিক-পানে ভাসছে ছেঁড়া-শাড়ি
ওইখানটায় বলি শোনো হায়,ছিল আমাদের বাড়ি।

বাড়ির পাশেই সবজি-বাগান, বিশাল খেলার মাঠ
ডানদিকে ঠায় এগিয়ে গেলেই দোকান-বাজার-হাট!
ওই যে দেখছ নৌকোখানা দাঁড়িয়ে মাঝখানে
ওইখানে কী ছিল, সেটা গাঁয়ের সবাই জানে।

ওইখানেতেই ছিল আমাদের মন্দির-আটচালা
সন্ধেবেলায় বসত সেথায় বয়স্ক-পাঠশালা
কাশেমচাচা, মজিদমিয়া, শ্যামদা, খগেনখুড়ো
সারাদিনের কাজের শেষে ক্লান্ত জোয়ান-বুড়ো
হাজির হত সবাই সেথায় লেখাপড়ার টানে
পড়ার শেষে মাতত তারা গল্প-নাটক-গানে!

মন্দিরেতে সাজত ঠাকুর, বাজত ঘণ্টা-কাঁসর
শীতের সময় বসত মাঠে যাত্রাপালার আসর।
মাঝেমাঝেই তরজা-ঝুমুর-বাউল-কবিগান
নকল রফি-কিশোর-লতার রাতজাগা ফাংশান!

সব কিছু মা গিলে খেলো ওই নদী-রাক্ষুসি
আমরা সবাই সর্বস্বান্ত, ও-ই একা থাক খুশি!
এসব কথা বলতে মাগো যাচ্ছে ফেটে, বুক
সব হারিয়ে কারো মনেই একফোঁটা নেই সুখ!
আর কেউ না বুঝুক মাগো, একটু তুমি বুঝো
কেমন করে কোথায় তোমার করব মাগো পুজো?