১। ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতাটি কার লেখা?

উত্তরঃ ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতাটি কবি শঙ্খ ঘোষের লেখা।

২। ‘আমাদের’ বলতে কবি কাদের বুঝিয়েছেন ?

উত্তরঃ কবি শঙ্খ ঘোষ তাঁর কবিতায় ‘আমাদের’ বলতে দেশকালের সীমা ছাড়িয়ে সাম্রাজ্যবাদী ও হানাদারি শত্রুর হাতে আক্রান্ত সাধারণ মানুষদের বুঝিয়েছেন।

৩। ‘আমাদের মাথায় বোমারু’ – এ কথা বলার কারণ কি?

উত্তরঃ বোমানিক্ষেপকারী যুদ্ধবিমান হল বোমারু। ক্ষমতাশীল ও সাম্রাজ্যবাদী শক্তি যেমন বোমারু বিমান থেকে অতর্কিতে আক্রমণ চালায়, আর সেই আক্রমণে মানুষের জীবন আজ বিপন্ন। কবিতায় সেই বিপন্নতার কথাই বোঝানো হয়েছে।

৪।  ডান পাশে ধ্বস’ ও ‘বাঁয়ে গিরিখাদ’ বলতে আসলে কবি কী বুঝিয়েছেন?

উত্তরঃ ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতায় ‘ডান পাশে ধ্বস’ ও ‘ বাঁয়ে গিরিখাদ’ বলতে কবি শঙ্খ ঘোষ আসলে মানুষের প্রতি পদে পদে বিপদ এবং পতনের আশঙ্কার কথা ব্যক্ত করেছেন।

৫। ‘ছড়ানো রয়েছে কাছে দূরে’ —কী ছড়ানো রয়েছে?

উত্তরঃ কবি শঙ্খ ঘোষের লেখা ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’কবিতাটিতে নিষ্পাপ মানবশিশুর শব বা মৃতদেহ ছড়ানোরয়েছে কাছে ও দূরে।

৬। আমাদের ডান পাশে ধ্বস’ –‘ধ্বস’ শব্দটির আক্ষরিক অর্থ কী?

উত্তরঃ ‘ধ্বস’ শব্দটির আক্ষরিক অর্থ খসে পড়া । ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতায় সাধারণ মানুষের চলাফেরার প্রতি পদে পদে বিপদের সম্ভাবনাকে ফুটিয়ে তুলতে কবি শব্দটি ব্যবহার করেছেন।

৭। ‘আমাদের পথ নেই আর’ – আমাদের পথ নেই কেন?

উত্তরঃ সাম্রাজ্যবাদের আগ্রাসন ও যুদ্ধবাজদের নির্যাতন আশ্রয়হীন ও সর্বহারা মানুষেদের মুক্তির পথ রোধ করেছে। প্রতিনিয়ত তাদের মুখোমুখি হতে হয়েছে মৃত্যুর সঙ্গে। তাই তাদের বেঁচে থাকার কোনো পথই অবশিষ্ট নেই।

৮। ‘আমাদের বাঁয়ে গিরিখাদ’ – ‘গিরিখাদ’ শব্দটির আক্ষরিক অর্থ লেখো।

উত্তরঃ ‘গিরিখাদ’ হল দুই পর্বতের মাঝে সৃষ্ট গভীর খাদ। পাহাড়ী পথের বিপদসংকুলতার মতোই বর্তমান বিশ্বে মানুষের জীবনে ছড়িয়ে থাকা নানান প্রতিকূলতাকে বোঝাতে শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে।

৯। ‘পায়ে পায়ে হিমানীর বাঁধ’—‘ পায়ে পায়ে’ বলতে কবিতায় কী বোঝানো হয়েছে ?

উত্তরঃ আলোচ্য কবিতায় ‘পায়ে পায়ে’ বলতে মানুষের প্রতি পদক্ষেপকে বোঝানো হয়েছে। মানুষের জীবনে চলার পথে নানান প্রতিকূলতা ও সংকট প্রতি মুহূর্তে বরফের দেওয়ালের মতোই বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। ‘হিমানীর বাঁধ’ সেই বাধার প্রতীক।

১০। ‘আমাদের পথ নেই আর’ – তাহলে আমাদের করণীয় কী?

উত্তরঃ আমাদের অর্থাৎ সর্বহারা মানুষদের বাঁচার পথ যখন ক্রমশ সংকীর্ণ হয়ে আসে, দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যায় তখন সহানুভূতি ও সহমর্মিতার সাথে আরও বেশি সংঘবদ্ধ হয়ে থাকা উচিত।

১১। ‘আমাদের পথ নেই আর’ বলার কারণ কী ?

উত্তরঃ ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতা অনুসারে বর্তমান পৃথিবীতে সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন ও যুদ্ধবাজদের কারণে মানুষ বড়ো অসহায় ও নিরুপায়। প্রতিনিয়ত তার চলার পথে রয়েছে নানান প্রতিকূলতা ও সংকট। এই প্রতিকূলতা ও সংকট ফুটিয়ে তুলতেই কবি এমন মন্তব্য করেছেন।

১২। ‘আমাদের ইতিহাস নেই’ এ কথা বলা হয়েছে কেন?

উত্তরঃ ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতায় কবি সাধারণ গরিব মানুষদের প্রতিনিধি হিসেবে জানিয়েছেন যে তাদের ইতিহাস নেই। সাম্রাজ্যবাদী শক্তির আগ্রাসনের ফলে সাধারণ মানুষের  জীবন-জীবিকা ও আশ্রয় অনিশ্চিত। সাম্রাজ্যবাদীরা যুদ্ধের পরিবেশ ঘনিয়ে তুলে আমাদের শিকড় ও সংস্কৃতিকেধ্বংস করতে সদা উন্মুখ। তাই আমাদের ইতিহাস নেই।

১৩। ‘আমরা ভিখারি বারোমাস’ এ কথা বলার কারণ কী?

উত্তরঃ সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রশক্তির শোষণ, নিপীড়ন ও উৎপীড়নে সাধারণ মানুষের জীবন,জীবিকা ও বাসস্থান বিপন্ন। সাধারণ মানুষ তাই আশ্রয় ও জীবিকা হারিয়ে নানান প্রতিকূলতার কারণে অসহায় ভিখারীতে  পরিণত হয়।

১৪। ‘বেঁধে বেঁধে থাকি’– বেঁধে বেঁধে থাকার অর্থ কী?

উত্তরঃ বেঁধে বেঁধে থাকার অর্থ মিলেমিশে এক হয়েথাকা, সংঘবদ্ধ হয়ে সহমর্মিতার সঙ্গে বাঁচা। আয় আরও বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতায় কবি সমস্ত যুদ্ধবিধ্বস্ত সাধারণ মানুষদেরকে একসঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে থাকার আবেদন জানিয়েছেন।

১৫। ‘পৃথিবীতে হয়তো গেছে মরে’ –এ কথা বলা হয়েছে?

উত্তরঃ পৃথিবী এখন যেভাবে আছে তাকে সুষ্ঠভাবে বেঁচে থাকা বলা যায় না। যুদ্ধ, শোষণ, বঞ্চনা, শক্তির আস্ফালন ও অত্যাচারে সাধারণ মানুষের জীবন আজ বিপন্ন। তাই কবির মনে হয়েছে পৃথিবী থেকে হয়তো মনুষ্যত্ব হারিয়ে গেছে।

১৬। ‘আমরাও তবে এইভাবে / এ মুহূর্তে সরে যাব না কি?’— এ কথা বলার অর্থ কী ?

উত্তরঃ বিশ্বব্যাপী নানান প্রতিকূলতা, হানাদারি শত্রুর আক্রমণে গৃহহীন সাধারণ মানুষ চোখের সামনে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মৃত্যু দেখে হতাশ হয়ে পড়ে ও নিজের বেঁচে থাকাতেও সংশয় প্রকাশ করে। এমন পরিস্থিতিতে ইঙ্গিত করতেই কবি উদ্ধৃত উক্তিটি করেছেন।

১৭। ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ বলার কারণ কী ?

উত্তরঃ বিশ্বব্যাপী নানান প্রতিকূলতা ও সংকটের মাঝে চারদিকে হতাশার ছবি স্পষ্ট হলেও কবির বিশ্বাস পারস্পরিক সাহচর্য ও ঐক্যের জোরেই সমস্ত কিছু জয় করা সম্ভব। তাই কবি সমস্ত সচেতন ও বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষদেরকে সংঘবদ্ধ হতে বলেছেন।